Skip to main content

পেটে যখন দুধ সয় না...


দুধ খেলে গ্যাস্ট্রিক বাড়ে। দুধে বদহজম হয়। উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিসের রোগীদের দুধ খাওয়া নিষেধ এ রকম নানা কারণে আমরা দুধকে দায়ী করি। আসলে দুধ আমিষ ও ক্যালসিয়ামের চমত্কার উত্স। আর দুধ খেলে রক্তচাপ বা রক্তে শর্করা বাড়ে এটা মোটেও ঠিক নয়। কিন্তু বদহজম? হ্যাঁ, বদহজমের ভয়ে অনেক চিকিত্সকও অনেক সময় রোগীকে দুধ খেতে নিরুত্সাহিত করেন। 

আসলেই কি দুধ হজমে সমস্যা করে?

আমাদের ক্ষুদ্রান্ত্র থেকে নিঃসৃত হয় ল্যাকটোজ নামে এনজাইম বা উেসচক, যা দুধ বা দুগ্ধজাত খাবার বিপাকে সাহায্য করে। কোনো কোনো রোগ যেমন ইনফ্লামেটরি বাউয়েল ডিজিজ, সিলিয়াক ডিজিজ ইত্যাদিতে ল্যাকটোজ এনজাইমের ঘাটতি বা অকার্যকারিতা হতে পারে। ফলে এসব রোগীর দুধ বা দুগ্ধজাত খাবার সহজে হজম হয় না। দুধে আছে ল্যাকটোজ, আর তা হজমে সমস্যা হলে তাকে বলা হয় ল্যাকটোজ ইনটলারেন্স। কারও কারও বংশগতভাবে এই সমস্যা থাকতে পারে।

কীভাবে বুঝবেন, দুধ-অসহনীয়তা?
ল্যাকটোজ সমৃদ্ধ খাবার মানে দুধ বা দুগ্ধজাত খাবার গ্রহণের ৩০ মিনিট থেকে ২ ঘণ্টার মধ্যে লক্ষণগুলো প্রকাশ পেতে থাকে। যেমন বমি ভাব, পেটের ভেতর অস্বস্তি, কামড়ানো, পেট ফাপা বা গ্যাস, ডায়রিয়া ইত্যাদি। এই লক্ষণগুলো ভিন্ন ভিন্ন মাত্রায় প্রকাশ পেতে পারে। জেনে রাখুন, ল্যাকটোজ সমৃদ্ধ খাবার হচ্ছে দুধ বা আইসক্রিম, মাখন, পনির, পুডিং, কাস্টার্ড, দই, ফিরনি-পায়েস ইত্যাদি।

যদি থাকে দুধ-অসহনীয়তারোগের ইতিহাস বা উপসর্গ বিচারে চিকিত্সক যদি ভাবেন রোগীর ল্যাকটোজ অসহনীয়তা আছে, তবে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য দুধ বা দুগ্ধজাত খাবার গ্রহণে বিরতি নিতে বলতে পারেন। ল্যাকটোজ পরিহারই এর মূল চিকিত্সা। রোগীকে জানতে হবে, কোন কোন খাবারে কী মাত্রায় ল্যাকটোজ রয়েছে এবং তা এড়িয়ে চলা শিখতে হবে। কম মাত্রার ল্যাকটোজ সমৃদ্ধ খাবার যেমন কুকিজ, বিস্কুট, পাউরুটি, প্যানকেক, মার্জারিন ইত্যাদি অল্প অল্প করে চেষ্টা করতে পারেন।
খাদ্য তালিকা থেকে দুধ একেবারে বাদ দেওয়ার আগে অবশ্যই নিশ্চিত হয়ে নিন, আসলেই আপনার ল্যাকটোজ অসহনীয়তা আছে কি না। হয়তো এই মুহূর্তে যা হচ্ছে তা নিতান্তই সাময়িক।

Comments

Popular posts from this blog

আলসার রোগীর খাদ্য তালিকা

আলসার বা পেটের ভিতরে হওয়া ঘা রোগীর জীবনকে দুর্বিষহ করে তোলে। পেটের দেওয়ালে হওয়া ঘায়ের সঙ্গে খাবারের মধ্যে থাকা মশলা , তরল ইত্যাদির সংস্পর্শ হলে বা অ্যাসিডিটি হলে পেটে প্রচণ্ড ব্যথা হয় , গ্যাসট্রাইটিসের সমস্যা হয় , পেট জ্বালা করতে থাকে যা সহ্য করা একেক সময় অসম্ভব হয়ে ওঠে। আলসারের মধ্যে সবচেয়ে চেনা নাম হল ' গ্যাসট্রিক আলসার ' । আল্ট্রাসনোগ্রাফি করে আলসার ধরা পড়ার পর চিকিৎসার মাধ্যমে সারানো যায়। বস্তুত , আলসার সারানোর নানা উপায় রয়েছে। আলসার সেরে যাওয়ার পর ঠিকমতো ডায়েট চার্ট মেনে চলাও সবার অবশ্য কর্তব্য। একইসঙ্গে ধূমপান না করা , মদ্যপানে বিরত থাকার কথাও চিকৎসকেরা বারবার করে বলে দেন। আসুন দেখে নেওয়া যাক , কোন কোন খাবার ডায়েট চার্টে থাকলে আলসার সারতে পারে সহজেই। মধু মধু এমন একটি অ্যান্টিসেপটিক যা যে কোনও জ্বালা-পোড়া বা ঘা সারাতে লড়াই করে। মধু খেলে আলসার আর বাড়ে না। বরং ধীরে ধীরে কমবে। টক দই কম ফ্যাটের ডেয়ারি প্রোডাক্ট, বিশেষ করে দই আলসার সারাতে অসাধারণ কাজ করে। চর্বিহীন মাংস ও পোলট্রি  প্রোডাক্ট চর্বিহীন মাংস ও পোল...

আমাশয় এবং আইবিএস কি ? #004

শহরের স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মুরাদ হোসেন, বয়স পঞ্চাশ, উদ্বিগ্ন মনে একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের চেম্বারে বসে আছেন। কয়েকদিন যাবৎ তার পেটটা ভাল যাচ্ছে না। এর আগেও তার পাতলা পায়খানার সমস্যা হয়েছে। কিন্তু এবার তিনি লক্ষ্য করেছেন- পায়খানার সাথে লাল লাল রক্ত যাচ্ছে। তাই তিনি চিন্তিত মনে তার সমস্যা নির্ণয়ের চেষ্টায় চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়েছেন। পারভিন আক্তার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী। বয়স চব্বিসের কাছাকাছি হবে। কয়েক মাস ধরে তার পেটে সমস্যা হচ্ছে। দিনে দু থেকে তিনবার পায়খানা হয়, প্রত্যেকবার পায়খানার আগে পেটটা মোচড় দিয়ে ব্যথা হয়, পায়খানা হয়ে গেলে ব্যথা কমে যায়। পেটে শব্দ হয় এবং পায়খানা কিছুদিন পাতলা হয়, আবার কিছুদিন ভাল থাকে। পায়খানার সাথে আম যায়। এমতাবস্থায় দৈনন্দিন কাজে সমস্যা হওয়ায় একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের নিকট পরামর্শের জন্য এসেছেন। দীর্ঘমেয়াদী লিভার প্রদাহের সমস্যায় ভুগছেন চল্লিশ বছর বয়সী রাকিব মোল্লা। নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শে ঔষধ সেবন করে যাচ্ছেন। কয়েক মাস হল তার পায়খানা পাতলা হতে শুরু করেছে। কিছুদিন ভাল থাকে, কিছুদিন পাতলা হয়, কিছুদিন কষা হয়। পায়খানার সাথে আম যায়। পেটে খু...

ওজন কমানোর ছয় টি ভুল ধারণা

বাড়তি ওজন কমে গেলে কার না ভালো লাগে! তাই ওজন কমাতে অনেকে হয়তো উঠেপড়ে লাগেন। আর ভুলভাল রীতি মেনে চলতে থাকেন।এতে অনেকের বাড়তি মেদ   কমলেও শরীরের ওপর বাজে প্রভাব পড়ে। আবার চেষ্টার পরও কাঙ্ক্ষিত ফলাফল পায় না অনেকে। ওজণ   কমানোর কিছু ভুল ধারণার কথা   জেনে নিন। 1: কার্বোহাইড্রেট শত্রু অনেকেই ওজণ কমানোর সময় কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার একেবারেই বাদ দিয়ে দেন বা ভাবেন Weight কমাতে গেলে কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার বাদ দিতেই হবে। সত্য হলো , শরীরের বাড়তি মেদ কমাতে গেলে বা স্বাস্থ্যকে ভালো রাখতে গেলে কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার বাদ দিলে চলবে না। স্বাস্থ্যকর কার্বোহাইড্রেটের উৎস যেমন : ফল , সবজি , বাদাম , গম জাতীয় খাবার এগুলো শরীরের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।   ওজন   কমাতে প্রোটিনের সঙ্গে কার্বোহাইড্রেটের ভারসাম্য রাখতে হবে। তবে পরিশোধিত কার্বোহাইড্রেট খাওয়া কমিয়ে দেওয়ার বিষয়ে একমত বিশেষজ্ঞরা। পরিশোধিত কার্বোহাইড্রেট যেমন : সাদা ভাত , সাদা পাস্তা , প্রক্রিয়াজাত স্ন্যাক , মিষ্টি ইত্যাদি। এগুলো কম খাওয়াই ভালো। 2: দ্রুত ফলাফল পেতে জিমে গিয়ে কঠোর ব্যায়াম করা প্রতিদিন সমপর...