Skip to main content

শিশুর কোষ্ঠকাঠিন্য

শিশুদের কোষ্ঠকাঠিন্য হলে কান্নাকাটি করে, পেট মোচড়ায় এবং খাওয়াদাওয়াও কমিয়ে দেয়। অস্বস্তি হয় বলেই এমনটা করে তারা। শিশুর এই অস্বস্তি মায়েদের উৎকণ্ঠা বাড়িয়ে দেয়। তাঁরা পানের বোঁটা বা সরষের তেলে আঙুল মাখিয়ে মলদ্বারে ঢুকিয়ে দেন। এতে সাময়িক সুফল এলেও পরে ফল হতে পারে মারাত্মক।

স্বাভাবিক পায়খানা দুই-তিন দিন পরপর হলেও তাকে কিন্তু চিকিৎসাবিজ্ঞানে কোষ্ঠকাঠিন্য বলে না। পরপর তিন দিন শক্ত পায়খানা হলে বা মলত্যাগ করতে কারও যদি অসুবিধা হয় অথবা বেশি সময় লাগে, তাকেই আমরা কোষ্ঠকাঠিন্য বলে থাকি। 

কারণ কী?
সবচেয়ে বড় কারণ অপর্যাপ্ত আঁশযুক্ত খাবার গ্রহণ। যেসব শিশু কৌটার দুধ খায় তাদেরও সমস্যা বেশি হয়। অপর্যাপ্ত পানি পান করার জন্য কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে। শিশুর কোষ্ঠকাঠিন্য হলে মলত্যাগের সময় ব্যথা পায়, ফলে দ্বিতীয়বার মলত্যাগের সময় সে ভয় পায় এবং পায়খানা চেপে ধরে রাখে। ফলে পায়খানা আরও শক্ত হয়ে যায়, বেশ কয়েক দিন পর শক্ত পায়খানা বের হওয়ার সময় পায়খানার রাস্তায় ক্ষত হতে পারে এবং সামান্য রক্তও বেরোতে পারে। এ ছাড়া অল্প বয়সেই গরুর দুধ খেলে, মলদ্বারের মাংসপেশির ত্রুটি, মানসিক প্রতিবন্ধী, সেরেব্রাল পলসি, হাইপোথাইরয়েডিজম, ক্যালসিয়াম ও অতিরিক্ত ভিটামিন ডি গ্রহণ ইত্যাদি কারণে কোষ্ঠকাঠিন্য হয়। 
চিকিৎসা
মলত্যাগের ব্যাপারে শিশুর সামনে উদ্বেগ প্রকাশ করা এবং মলত্যাগ করছে না বলে বকাবকি করা উচিত নয়। প্রয়োজনে সময়মতো মলত্যাগের জন্য উৎসাহিত করতে হবে। বুকের দুধ খাওয়ালে কোষ্ঠকাঠিন্য হয় না। তাই দুই বছর বয়স পর্যন্ত শিশুকে বুকের দুধ খাওয়াতে হবে। দুই বছর বয়সের পর টিনের দুধ খাওয়ালে দুধ পাতলা করে না খাইয়ে পরিমাণমতো ঘন করে খাওয়াতে হবে। বাজারে যে সমস্ত কৌটার দুধ পাওয়া যায় তার গায়ে নির্দেশিত নিয়মানুযায়ী দুধ তৈরি করে খাওয়াতে হবে। এ ছাড়া প্রচুর পানি পান করতে দিন।
একটু বড় শিশুদের মধু, দুধ, সাগু খাওয়ালে উপকার পাওয়া যায়। আঁশযুক্ত খাবার যেমন—শাকসবজি, পাকা কলা, বেল, পেঁপে, আম উপকারে আসে। ছোট-বড় শিশুকে নিয়মিত মলত্যাগের অভ্যাস করাতে হবে। সকালে ঘুম থেকে উঠে একবার এবং সকালে নাশতার পর আরেকবার পায়খানার অভ্যাস করানো ভালো। শিশু মলত্যাগের সময় ব্যথা পেলে তাকে জোর না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

Comments

Popular posts from this blog

আলসার রোগীর খাদ্য তালিকা

আলসার বা পেটের ভিতরে হওয়া ঘা রোগীর জীবনকে দুর্বিষহ করে তোলে। পেটের দেওয়ালে হওয়া ঘায়ের সঙ্গে খাবারের মধ্যে থাকা মশলা , তরল ইত্যাদির সংস্পর্শ হলে বা অ্যাসিডিটি হলে পেটে প্রচণ্ড ব্যথা হয় , গ্যাসট্রাইটিসের সমস্যা হয় , পেট জ্বালা করতে থাকে যা সহ্য করা একেক সময় অসম্ভব হয়ে ওঠে। আলসারের মধ্যে সবচেয়ে চেনা নাম হল ' গ্যাসট্রিক আলসার ' । আল্ট্রাসনোগ্রাফি করে আলসার ধরা পড়ার পর চিকিৎসার মাধ্যমে সারানো যায়। বস্তুত , আলসার সারানোর নানা উপায় রয়েছে। আলসার সেরে যাওয়ার পর ঠিকমতো ডায়েট চার্ট মেনে চলাও সবার অবশ্য কর্তব্য। একইসঙ্গে ধূমপান না করা , মদ্যপানে বিরত থাকার কথাও চিকৎসকেরা বারবার করে বলে দেন। আসুন দেখে নেওয়া যাক , কোন কোন খাবার ডায়েট চার্টে থাকলে আলসার সারতে পারে সহজেই। মধু মধু এমন একটি অ্যান্টিসেপটিক যা যে কোনও জ্বালা-পোড়া বা ঘা সারাতে লড়াই করে। মধু খেলে আলসার আর বাড়ে না। বরং ধীরে ধীরে কমবে। টক দই কম ফ্যাটের ডেয়ারি প্রোডাক্ট, বিশেষ করে দই আলসার সারাতে অসাধারণ কাজ করে। চর্বিহীন মাংস ও পোলট্রি  প্রোডাক্ট চর্বিহীন মাংস ও পোল...

আমাশয় এবং আইবিএস কি ? #004

শহরের স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মুরাদ হোসেন, বয়স পঞ্চাশ, উদ্বিগ্ন মনে একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের চেম্বারে বসে আছেন। কয়েকদিন যাবৎ তার পেটটা ভাল যাচ্ছে না। এর আগেও তার পাতলা পায়খানার সমস্যা হয়েছে। কিন্তু এবার তিনি লক্ষ্য করেছেন- পায়খানার সাথে লাল লাল রক্ত যাচ্ছে। তাই তিনি চিন্তিত মনে তার সমস্যা নির্ণয়ের চেষ্টায় চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়েছেন। পারভিন আক্তার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী। বয়স চব্বিসের কাছাকাছি হবে। কয়েক মাস ধরে তার পেটে সমস্যা হচ্ছে। দিনে দু থেকে তিনবার পায়খানা হয়, প্রত্যেকবার পায়খানার আগে পেটটা মোচড় দিয়ে ব্যথা হয়, পায়খানা হয়ে গেলে ব্যথা কমে যায়। পেটে শব্দ হয় এবং পায়খানা কিছুদিন পাতলা হয়, আবার কিছুদিন ভাল থাকে। পায়খানার সাথে আম যায়। এমতাবস্থায় দৈনন্দিন কাজে সমস্যা হওয়ায় একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের নিকট পরামর্শের জন্য এসেছেন। দীর্ঘমেয়াদী লিভার প্রদাহের সমস্যায় ভুগছেন চল্লিশ বছর বয়সী রাকিব মোল্লা। নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শে ঔষধ সেবন করে যাচ্ছেন। কয়েক মাস হল তার পায়খানা পাতলা হতে শুরু করেছে। কিছুদিন ভাল থাকে, কিছুদিন পাতলা হয়, কিছুদিন কষা হয়। পায়খানার সাথে আম যায়। পেটে খু...

ওজন কমানোর ছয় টি ভুল ধারণা

বাড়তি ওজন কমে গেলে কার না ভালো লাগে! তাই ওজন কমাতে অনেকে হয়তো উঠেপড়ে লাগেন। আর ভুলভাল রীতি মেনে চলতে থাকেন।এতে অনেকের বাড়তি মেদ   কমলেও শরীরের ওপর বাজে প্রভাব পড়ে। আবার চেষ্টার পরও কাঙ্ক্ষিত ফলাফল পায় না অনেকে। ওজণ   কমানোর কিছু ভুল ধারণার কথা   জেনে নিন। 1: কার্বোহাইড্রেট শত্রু অনেকেই ওজণ কমানোর সময় কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার একেবারেই বাদ দিয়ে দেন বা ভাবেন Weight কমাতে গেলে কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার বাদ দিতেই হবে। সত্য হলো , শরীরের বাড়তি মেদ কমাতে গেলে বা স্বাস্থ্যকে ভালো রাখতে গেলে কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার বাদ দিলে চলবে না। স্বাস্থ্যকর কার্বোহাইড্রেটের উৎস যেমন : ফল , সবজি , বাদাম , গম জাতীয় খাবার এগুলো শরীরের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।   ওজন   কমাতে প্রোটিনের সঙ্গে কার্বোহাইড্রেটের ভারসাম্য রাখতে হবে। তবে পরিশোধিত কার্বোহাইড্রেট খাওয়া কমিয়ে দেওয়ার বিষয়ে একমত বিশেষজ্ঞরা। পরিশোধিত কার্বোহাইড্রেট যেমন : সাদা ভাত , সাদা পাস্তা , প্রক্রিয়াজাত স্ন্যাক , মিষ্টি ইত্যাদি। এগুলো কম খাওয়াই ভালো। 2: দ্রুত ফলাফল পেতে জিমে গিয়ে কঠোর ব্যায়াম করা প্রতিদিন সমপর...