Skip to main content

বিরক্তিকর কোষ্ঠকাঠিন্য

নারীদের কি কোষ্ঠকাঠিন্য স্বাভাবিক? এ নিয়ে বড় তথ্য-উপাত্ত নেই। তবে জীবনের বিভিন্ন সময়ে নারীদের জন্য এটি বিরক্তিকর ও কষ্টকর স্বাস্থ্যগত সমস্যা হিসেবে দেখা দেয়। গবেষকেরা বলছেন, শারীরিক গঠনের পাশাপাশি কিছু খারাপ অভ্যাসও এর জন্য দায়ী।

গর্ভকালীন কোষ্ঠকাঠিন্য একটি পরিচিত সমস্যা। নানা হরমোনের প্রভাবে অন্ত্রের চলন কমে যাওয়া, ভারী পেটের কারণে পাকস্থলী খালি হতে বেশি সময় লাগা এবং এ সময় তলপেটে পেশি, স্নায়ু ইত্যাদির ওপর অতিরিক্ত চাপের কারণে এ ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। সন্তান প্রসবের পরও অনেক সময় এটি প্রকট আকারে দেখা দেয়। কারও কারও এ থেকে পাইলস বা ফিসার পর্যন্ত হয়। এ ছাড়া অনেক নারীরই মাসিকের সময় হঠাৎ করে ডায়রিয়া বা কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দিতে পারে। থাইরয়েডের সমস্যাও মেয়েদের মধ্যে বেশি, যা কোষ্ঠকাঠিন্যের জন্য দায়ী হতে পারে। দেখা গেছে, ইরিটেবল বাউয়েল সিনড্রোম নারীদের বেশি হয়। এতে কোষ্ঠকাঠিন্য লেগেই থাকতে পারে। এর বাইরে সম্প্রতি গবেষকেরা বলছেন, বাড়ির বাইরে প্রয়োজনে টয়লেট ব্যবহারে নারীদের অনীহা তাদের এসব আন্ত্রিক সমস্যা বাড়িয়ে দেয়।

এসব সমস্যা থেকে রেহাই পেতে প্রথমেই টয়লেট ব্যবহার নিয়ে শুচিবাই থেকে বেরোতে হবে নারীদের। অফিসে, অন্য কারও বাড়িতে বা মার্কেটে, যেখানেই প্রয়োজন হোক, মল আটকে রাখবেন না। এই অভ্যাস অন্ত্রের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। যাঁরা বাইরে সময় কাটান, তাঁরা পানি কম খেতে চেষ্টা করেন। এই খারাপ অভ্যাসও দূর করতে হবে। প্রচুর পানি পান করুন। আঁশযুক্ত খাবার, যেমন শাকসবজি, ফলমূল গ্রহণ করুন যথেষ্ট।

গর্ভাবস্থায় সমস্যা বেশি হলে আপনার চিকিৎসকের সাহায্য নিন। প্রয়োজনে অন্ত্রের সচলতা বাড়ানোর জন্য তিনি কিছু ওষুধ দিতে পারেন। ওজন কমাতে চেষ্টা করুন। তেল, চর্বিযুক্ত ফাস্ট ফুড বর্জন করুন। প্রয়োজনে থাইরয়েড পরীক্ষা করে নিন। কোষ্ঠকাঠিন্য হয়, এমন কোনো ওষুধ খাচ্ছেন কি না, লক্ষ করুন। পাইলস বা ফিসার হলে, মলত্যাগের সময় ব্যথা বা রক্তপাত হলে লুকিয়ে রাখবেন না, অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হবেন। মনে রাখবেন, আকস্মিক কোষ্ঠকাঠিন্যের উপসর্গ কোলন ক্যানসারের কারণেও হতে পারে। তাই মেয়েদের কোষ্ঠকাঠিন্য স্বাভাবিক, এটা ভেবে নিয়ে বসে থাকলে চলবে না।

Comments

Popular posts from this blog

আলসার রোগীর খাদ্য তালিকা

আলসার বা পেটের ভিতরে হওয়া ঘা রোগীর জীবনকে দুর্বিষহ করে তোলে। পেটের দেওয়ালে হওয়া ঘায়ের সঙ্গে খাবারের মধ্যে থাকা মশলা , তরল ইত্যাদির সংস্পর্শ হলে বা অ্যাসিডিটি হলে পেটে প্রচণ্ড ব্যথা হয় , গ্যাসট্রাইটিসের সমস্যা হয় , পেট জ্বালা করতে থাকে যা সহ্য করা একেক সময় অসম্ভব হয়ে ওঠে। আলসারের মধ্যে সবচেয়ে চেনা নাম হল ' গ্যাসট্রিক আলসার ' । আল্ট্রাসনোগ্রাফি করে আলসার ধরা পড়ার পর চিকিৎসার মাধ্যমে সারানো যায়। বস্তুত , আলসার সারানোর নানা উপায় রয়েছে। আলসার সেরে যাওয়ার পর ঠিকমতো ডায়েট চার্ট মেনে চলাও সবার অবশ্য কর্তব্য। একইসঙ্গে ধূমপান না করা , মদ্যপানে বিরত থাকার কথাও চিকৎসকেরা বারবার করে বলে দেন। আসুন দেখে নেওয়া যাক , কোন কোন খাবার ডায়েট চার্টে থাকলে আলসার সারতে পারে সহজেই। মধু মধু এমন একটি অ্যান্টিসেপটিক যা যে কোনও জ্বালা-পোড়া বা ঘা সারাতে লড়াই করে। মধু খেলে আলসার আর বাড়ে না। বরং ধীরে ধীরে কমবে। টক দই কম ফ্যাটের ডেয়ারি প্রোডাক্ট, বিশেষ করে দই আলসার সারাতে অসাধারণ কাজ করে। চর্বিহীন মাংস ও পোলট্রি  প্রোডাক্ট চর্বিহীন মাংস ও পোল...

আমাশয় এবং আইবিএস কি ? #004

শহরের স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মুরাদ হোসেন, বয়স পঞ্চাশ, উদ্বিগ্ন মনে একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের চেম্বারে বসে আছেন। কয়েকদিন যাবৎ তার পেটটা ভাল যাচ্ছে না। এর আগেও তার পাতলা পায়খানার সমস্যা হয়েছে। কিন্তু এবার তিনি লক্ষ্য করেছেন- পায়খানার সাথে লাল লাল রক্ত যাচ্ছে। তাই তিনি চিন্তিত মনে তার সমস্যা নির্ণয়ের চেষ্টায় চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়েছেন। পারভিন আক্তার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী। বয়স চব্বিসের কাছাকাছি হবে। কয়েক মাস ধরে তার পেটে সমস্যা হচ্ছে। দিনে দু থেকে তিনবার পায়খানা হয়, প্রত্যেকবার পায়খানার আগে পেটটা মোচড় দিয়ে ব্যথা হয়, পায়খানা হয়ে গেলে ব্যথা কমে যায়। পেটে শব্দ হয় এবং পায়খানা কিছুদিন পাতলা হয়, আবার কিছুদিন ভাল থাকে। পায়খানার সাথে আম যায়। এমতাবস্থায় দৈনন্দিন কাজে সমস্যা হওয়ায় একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের নিকট পরামর্শের জন্য এসেছেন। দীর্ঘমেয়াদী লিভার প্রদাহের সমস্যায় ভুগছেন চল্লিশ বছর বয়সী রাকিব মোল্লা। নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শে ঔষধ সেবন করে যাচ্ছেন। কয়েক মাস হল তার পায়খানা পাতলা হতে শুরু করেছে। কিছুদিন ভাল থাকে, কিছুদিন পাতলা হয়, কিছুদিন কষা হয়। পায়খানার সাথে আম যায়। পেটে খু...

ওজন কমানোর ছয় টি ভুল ধারণা

বাড়তি ওজন কমে গেলে কার না ভালো লাগে! তাই ওজন কমাতে অনেকে হয়তো উঠেপড়ে লাগেন। আর ভুলভাল রীতি মেনে চলতে থাকেন।এতে অনেকের বাড়তি মেদ   কমলেও শরীরের ওপর বাজে প্রভাব পড়ে। আবার চেষ্টার পরও কাঙ্ক্ষিত ফলাফল পায় না অনেকে। ওজণ   কমানোর কিছু ভুল ধারণার কথা   জেনে নিন। 1: কার্বোহাইড্রেট শত্রু অনেকেই ওজণ কমানোর সময় কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার একেবারেই বাদ দিয়ে দেন বা ভাবেন Weight কমাতে গেলে কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার বাদ দিতেই হবে। সত্য হলো , শরীরের বাড়তি মেদ কমাতে গেলে বা স্বাস্থ্যকে ভালো রাখতে গেলে কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার বাদ দিলে চলবে না। স্বাস্থ্যকর কার্বোহাইড্রেটের উৎস যেমন : ফল , সবজি , বাদাম , গম জাতীয় খাবার এগুলো শরীরের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।   ওজন   কমাতে প্রোটিনের সঙ্গে কার্বোহাইড্রেটের ভারসাম্য রাখতে হবে। তবে পরিশোধিত কার্বোহাইড্রেট খাওয়া কমিয়ে দেওয়ার বিষয়ে একমত বিশেষজ্ঞরা। পরিশোধিত কার্বোহাইড্রেট যেমন : সাদা ভাত , সাদা পাস্তা , প্রক্রিয়াজাত স্ন্যাক , মিষ্টি ইত্যাদি। এগুলো কম খাওয়াই ভালো। 2: দ্রুত ফলাফল পেতে জিমে গিয়ে কঠোর ব্যায়াম করা প্রতিদিন সমপর...