অ্যাসিডিটির কারণ কি ?
অ্যাসিডিটির সমস্যায় কম বেশি আমাদের সবাইকেই ভুগতে হয়। পাকস্থলীতে অতিরিক্ত অ্যাসিড বা অম্ল উপরের দিকে উঠে দেখা দেয় নানা ধরনের সমস্যা। এর থেকে পেট ব্যথা হয়, অতিরিক্ত অ্যাসিডের কারণে বুকে জ্বালাপোড়াও হয়। হঠাৎ হঠাৎ গলা বা বুক জ্বলতে থাকা। কখনও টক জাতীয় খাবারে মুখ বা গলা ভরে আসে। জিভ তেঁতো লাগে। কমবেশি সবাই এই সমস্যায় ভোগেন। এই সমস্যা অ্যাসিডিটি নামেই পরিচিত।অতিরিক্ত খাবারে অনিয়ম আর এই সাধারণ অ্যাসিডিটির সমস্যা থেকে আলসারের সুত্রপাত হয়। তাই শুরুতেই সতর্ক হওয়া জরুরি।
কারণ
১) ভরপেট খেলে এই সমস্যা বেশি হয়।
২) খেয়েই শুয়ে পড়া ঠিক নয়। খাওয়ার পরপরই চিৎ হয়ে শুয়ে পড়লে অ্যাসিড উপরের দিকে ঠেলে উঠতে পারে।
৩) কিছু কিছু খাবার অ্যাসিডিটির সমস্যা বাড়ায়। ভালো ভাবে চিবিয়ে না খাওয়া, অতিরিক্ত মশলা জাতীয় খাবার খাওয়া, কিছু ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশনসহ বিভিন্ন কারণে এই সমস্যা দেখা দিতে পারে।
৪) অতিরিক্ত মদপান কিংবা কফি খেলে অ্যাসিডিটি দেখা দিতে পারে।
৫) যাদের ওজন বেশি তাদের বুক বা গলা জ্বলার সমস্যা বেশি দেখা যায়। ওজন কমাতে পারলে সমস্যা অনেকটাই কমিয়ে আনা সম্ভব।
৬) ধূমপান অ্যাসিডিটি বাড়িয়ে দেয়। তাই ধূমপান বন্ধ করলে অ্যাসিডিটি থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
৮) নানা ধরণের ওষুধ খেলেও অ্যাসিডিটির সমস্যা হতে পারে। ব্যথা কমানোর ওষুধে সমস্যা বাড়তে পারে।
সমাধান
কিছু সহজ ও প্রাকৃতিক উপায় আছে যেগুলো মানবে সহজে অ্যাসিডিটি দূর হয়।চলুন জেনে নেয়া যাক
১) গরম পানি
সাধারণত কুসুম গরম পানি রাতে ঘুমানোর আগে এবং সকালে ঘুম থেকে উঠে খেলে এসিডিটির সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
২) দারচিনি:
হজম ক্রিয়ার জন্য খুবই ভাল, এটি প্রাকৃতিক অ্যান্টাসিড যা পেটের গ্যাস দূর করে।আধা চা চামচ দারচিনি পাউডার এক গ্লাস গরম দুধে নিয়ে ভালো ভাবে মিশিয়ে নিন। এরপর একটু ঠাণ্ডা হলে পান করুন। ইচ্ছা করলে এতে কিছু মধু মিশিয়ে নেয়া যেতে পারে। এছাড়া দারচিনির চা খাওয়া যেতে পারে। এজন্য গরম পানিতে পাউডার মিশিয়ে কিছুক্ষণ নেড়ে এরপর পান করুন।
৩) পুদিনা পাতা
এর বায়ুনিরোধক ও প্রশান্তিদায়ক গুণ নিমিষেই বুক ও পেট জ্বালাপোড়া করা, পেট ফাঁপা ও বমি ভাব উপশম করে।পুদিনা পাতা হজমে সাহায্য করে এবং পাকস্থলিতে অ্যাসিড নিঃসরণ কমায়। এর ঠাণ্ডা অনুভূতি অ্যাসিডিটির কারণে তৈরি জ্বালা কমায়।তাই অ্যাসিডিটির লক্ষণ দেখা দিলেই কয়েকটি পুদিনা পাতা মুখে নিয়ে চিবিয়ে খেয়ে ফেলতে হবে বা খেতে পারেন চা বানিয়ে। এক কাপ পানিতে ৪/৫ টি পুদিনা পাতা দিয়ে ফুটিয়ে খেতে পারেন বা চাইলে তাতে একটু মধুও যোগ করতে পারেন।
৪)আপেল সাইডার ভিনেগার
এর ক্ষারধর্মী প্রভাব পাকস্থলীর এসিডিটির সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। ১-২ চা চামচ অশোধিত ভিনেগার এক কাপ পানিতে মিশিয়ে খাবার আগে বা দিনে এক বা দুইবার খেতে পারেন।
৫)এলাচ
এলাচ খাবারের খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। এটি হজমে সহায়তা করে। পাকস্থলির ভেতরের আচ্ছাদনকে প্রশমিত করে এবং অতিরিক্ত অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণ করে।দুটি এলাচ নিন। এর ভেতরের দানাগুলো গুঁড়ো করে পানিতে ফুটিয়ে নিন। এই পানি ঠাণ্ডা করে পান করুন। অ্যাসিডিটি সমস্যায় ঝটপট সমাধান দেবে এই পানীয়।
৬) লবঙ্গ
লবঙ্গ হজমে সাহায্য করে এবং পাকস্থলীর অ্যাসিডিটি ও গ্যাস দূর করতে পারে এর বায়ু নিরোধক ক্ষমতার জন্য। ২/৩ টি লবঙ্গ মুখে নিয়ে চুষলে বা সমপরিমান এলাচ ও লবঙ্গ গুঁড়া খেলে অ্যাসিডিটির জ্বালা এবং মুখের দুর্গন্ধ দূর হয়।বুক জ্বলুনি ঠেকাতে লবঙ্গে প্রাকৃতিক গুণ আছে। বুক জ্বলুনি বোধ করলে একটি লবঙ্গ মুখে দিয়ে চিবোতে পারেন।
৭)জিরা
পাকস্থলীর এসিডকে নিরপেক্ষ করে পেটের ব্যাথা দূর করতে এবং হজমক্রিয়ায় জিরা চমৎকার কাজ করে। দেড়কাপ পানিতে এক চা চামচ করে জিরা, ধনে ও মৌরী গুঁড়া এবং সামান্য চিনি মিশিয়ে খালি পেটে খেতে পারেন অথবা এক গ্লাস পানিতে সামান্য জিরার গুঁড়া মিশিয়ে বা ফুটিয়ে ছেঁকে নিয়ে প্রতিবেলা খাবার পর খেতে পারেন।
৮) রসুন
অ্যাসিডিটির সমস্যা কমাতে রসুনের কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। এক্ষেত্রে এক কোয়া রসুন খেয়ে ফেললেই পাকস্থলির অ্যাসিডের কর্মক্ষমতা কমে যায়। ফলে গ্যাস-অম্বল সংক্রান্ত নানা লক্ষণ ধীরে ধীরে কমে যেতে শুরু করে।
৯) আদা
আদার রস পাকস্থলীর এসিডকে প্রশমিত করতে সাহায্য করে। অ্যাসিডিটির সময় এক টুকরো আদা মুখে নিয়ে চুষলে বা এক কাপ পানিতে কয়েক টুকরো আদা দিয়ে কিছুক্ষন ফুটিয়ে রেখে খেতে পারেন কিংবা শুধু এক চা চামচ করে আদার রস দিনে ২/৩ বার খেলে অ্যাসিডিটির থেকে মুক্তি পেটে পারেন।
১০) তালের গুড়
তালের গুড় খাবারকে হজমে সাহায্য করে এবং হজমক্রিয়াকে ক্ষারধর্মী করে অ্যাসিডিটি কমায়। প্রতিবেলা খাবার পর ছোট এক টুকরো গুড় মুখে নিয়ে চুষতে থাকবেন যতক্ষন না অ্যাসিডিটির জ্বালা কমে। তবে যাদের ডায়াবেটিস আছে তাদের জন্য এটা প্রযোজ্য নয়।
১১)মৌরী
পুদিনা পাতার মতো মৌরীরও রয়েছে বায়ু নিরোধক ক্ষমতা যার ফলে খাবার হজম করতে এবং পেটের গ্যাস দূর করতে এটা বেশ কার্যকরী। ভারী ও ঝাল খাবারের পর কিছু মৌরী মুখে দিয়ে চুষতে পারেন। আবার এক বা দুই চা চামচ মৌরী এক কাপ গরম পানিতে দিয়ে কিছুক্ষন রেখে ছেঁকে নিয়ে দিনে কয়েকবার খেতে পারেন।
১2) ঠাণ্ডা দুধ
পাকস্থলীর গ্যাস্ট্রিক এসিডকে নিয়ন্ত্রণ করে এসিডিটি থেকে মুক্তি দেয় দুধ। দুধে থাকা ক্যালসিয়াম পাকস্থলীতে এসিড তৈরিতে বাধা দেয়। শুধুমাত্র এক গ্লাস ঠাণ্ডা দুধ পান করেই এসিডিটির সমস্যা প্রতিরোধ বা উপশম করা সম্ভব। তবে খেয়াল রাখতে হবে যেন দুধটি পর্যাপ্ত পরিমাণ ঠাণ্ডা হয় এবং এতে কোনো চিনি মেশানো না থাকে।
১৩)কলা
কলা পটাসিয়ামের চমৎকার একটি উৎস। কলা খাওয়ার ফলে আপনার পাকস্থলির অ্যাসিড উৎপাদনের মাত্রা স্বাভাবিক হয়ে আসে। এই ফলে থাকা কিছু উপাদান অ্যাসিড থেকে পাকস্থলিকে রক্ষা করে। এর উচ্চ মাত্রার ফাইবার হজমে সহায়তা করে এবং অ্যাসিডিটি কমায়। তাই অ্যাসিডিটি থেকে ঝটপট মুক্তি পেতে একটি পাকা কলা খেয়ে ফেলুন। খুব বেশি সমস্যা হলে অতিরিক্ত পাকা কলা খান। বেশি পাকা কলায় বেশি মাত্রায় পটাসিয়াম থাকায় এটি খুব ভালো অম্লতানাশক হিসেবে কাজ করে।
১৪)সবজি:
সজনে ডাটা, শিম, মিষ্টি কুমড়া, বাঁধাকপি, গাজর, পেঁয়াজের মতো সবজিতে অ্যাসিডিটি ঠেকানোর উপাদান আছে। এ ধরনের সবজি খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন।
১৫). তুলসি পাতা
একেবারে ঠিক শুনেছেন। গ্যাস-অম্বলের সমস্যা কমাতে তুলসি পাতা দারুন কাজে আসে। এতে এমন কিছু উপাদান রয়েছে, যা খুব অল্প সময়ে অ্যাসিডিটিকে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে। তাই তো নিমেষে আরাম পেতে ৩-৫ টি তুলসি পাতা পানিতে ভিজিয়ে, সেই পানি ফুটিয়ে খেয়ে ফেলুন। দেখবেন চোখের পলকে অ্যাসিডিটি কমে যাবে।
১৬.) ডাবের পানি
গরমের সময় শরীরে পানির ঘাটতি মেটানোর পাশপাশি পাকস্থলির এসিডের ক্ষরণ স্বাভাবিক করতেও ডাবের পানি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। শুধু তাই নয়, শরীরে উপস্থিতি অতিরিক্ত এসিডকে বের করে দিতেও এই প্রাকৃতিক পানীয়টি সাহায্য করে। তাই তো অ্যাসিডিটির সমস্যা থেকে দূরে থাকতে প্রতিদিন ডাবের পানি খাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা।
১৭). অ্যালোভেরা
প্রচুর পরিমাণে খনিজ থাকার কারণে ত্বককে সুন্দর রাখার পাশপাশি হজম ক্ষমতার উন্নতিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে এই প্রাকৃতিক উপাদানটি। শুধু তাই নয়, অ্যালোভেরায় উপস্থিত এসিড, পাকস্থলিতে উৎপন্ন এসিডের কর্যকারিতা কমিয়ে দেয়। ফলে অ্যাসিডিটির সমস্যা একেবারে নিয়ন্ত্রণে চলে আসে।
১৮). ঘুমের আগে খাবার: ঘুমানোর কমপক্ষে দুই তিন ঘণ্টা আগে খাবার খাওয়া উচিত। ভারী খাবার খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিছানায় যাওয়া উচিত নয়।
সাবধানতা-
পরবর্তীতে যখনই আপনি এসিডিটির সমস্যায় পরবেন তখন এই পদ্ধতিগুলোর সাহায্য নিয়ে দেখতে পারেন কিন্তু যদি দেখেন ২/৩ দিন পরও আপনার সমস্যা থেকেই যাচ্ছে তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
অ্যাসিডিটির সমস্যায় কম বেশি আমাদের সবাইকেই ভুগতে হয়। পাকস্থলীতে অতিরিক্ত অ্যাসিড বা অম্ল উপরের দিকে উঠে দেখা দেয় নানা ধরনের সমস্যা। এর থেকে পেট ব্যথা হয়, অতিরিক্ত অ্যাসিডের কারণে বুকে জ্বালাপোড়াও হয়। হঠাৎ হঠাৎ গলা বা বুক জ্বলতে থাকা। কখনও টক জাতীয় খাবারে মুখ বা গলা ভরে আসে। জিভ তেঁতো লাগে। কমবেশি সবাই এই সমস্যায় ভোগেন। এই সমস্যা অ্যাসিডিটি নামেই পরিচিত।অতিরিক্ত খাবারে অনিয়ম আর এই সাধারণ অ্যাসিডিটির সমস্যা থেকে আলসারের সুত্রপাত হয়। তাই শুরুতেই সতর্ক হওয়া জরুরি।
কারণ
১) ভরপেট খেলে এই সমস্যা বেশি হয়।
২) খেয়েই শুয়ে পড়া ঠিক নয়। খাওয়ার পরপরই চিৎ হয়ে শুয়ে পড়লে অ্যাসিড উপরের দিকে ঠেলে উঠতে পারে।
৩) কিছু কিছু খাবার অ্যাসিডিটির সমস্যা বাড়ায়। ভালো ভাবে চিবিয়ে না খাওয়া, অতিরিক্ত মশলা জাতীয় খাবার খাওয়া, কিছু ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশনসহ বিভিন্ন কারণে এই সমস্যা দেখা দিতে পারে।
৪) অতিরিক্ত মদপান কিংবা কফি খেলে অ্যাসিডিটি দেখা দিতে পারে।
৫) যাদের ওজন বেশি তাদের বুক বা গলা জ্বলার সমস্যা বেশি দেখা যায়। ওজন কমাতে পারলে সমস্যা অনেকটাই কমিয়ে আনা সম্ভব।
৬) ধূমপান অ্যাসিডিটি বাড়িয়ে দেয়। তাই ধূমপান বন্ধ করলে অ্যাসিডিটি থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
৮) নানা ধরণের ওষুধ খেলেও অ্যাসিডিটির সমস্যা হতে পারে। ব্যথা কমানোর ওষুধে সমস্যা বাড়তে পারে।
সমাধান
কিছু সহজ ও প্রাকৃতিক উপায় আছে যেগুলো মানবে সহজে অ্যাসিডিটি দূর হয়।চলুন জেনে নেয়া যাক
১) গরম পানি
সাধারণত কুসুম গরম পানি রাতে ঘুমানোর আগে এবং সকালে ঘুম থেকে উঠে খেলে এসিডিটির সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
২) দারচিনি:
হজম ক্রিয়ার জন্য খুবই ভাল, এটি প্রাকৃতিক অ্যান্টাসিড যা পেটের গ্যাস দূর করে।আধা চা চামচ দারচিনি পাউডার এক গ্লাস গরম দুধে নিয়ে ভালো ভাবে মিশিয়ে নিন। এরপর একটু ঠাণ্ডা হলে পান করুন। ইচ্ছা করলে এতে কিছু মধু মিশিয়ে নেয়া যেতে পারে। এছাড়া দারচিনির চা খাওয়া যেতে পারে। এজন্য গরম পানিতে পাউডার মিশিয়ে কিছুক্ষণ নেড়ে এরপর পান করুন।
৩) পুদিনা পাতা
এর বায়ুনিরোধক ও প্রশান্তিদায়ক গুণ নিমিষেই বুক ও পেট জ্বালাপোড়া করা, পেট ফাঁপা ও বমি ভাব উপশম করে।পুদিনা পাতা হজমে সাহায্য করে এবং পাকস্থলিতে অ্যাসিড নিঃসরণ কমায়। এর ঠাণ্ডা অনুভূতি অ্যাসিডিটির কারণে তৈরি জ্বালা কমায়।তাই অ্যাসিডিটির লক্ষণ দেখা দিলেই কয়েকটি পুদিনা পাতা মুখে নিয়ে চিবিয়ে খেয়ে ফেলতে হবে বা খেতে পারেন চা বানিয়ে। এক কাপ পানিতে ৪/৫ টি পুদিনা পাতা দিয়ে ফুটিয়ে খেতে পারেন বা চাইলে তাতে একটু মধুও যোগ করতে পারেন।
৪)আপেল সাইডার ভিনেগার
এর ক্ষারধর্মী প্রভাব পাকস্থলীর এসিডিটির সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। ১-২ চা চামচ অশোধিত ভিনেগার এক কাপ পানিতে মিশিয়ে খাবার আগে বা দিনে এক বা দুইবার খেতে পারেন।
৫)এলাচ
এলাচ খাবারের খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। এটি হজমে সহায়তা করে। পাকস্থলির ভেতরের আচ্ছাদনকে প্রশমিত করে এবং অতিরিক্ত অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণ করে।দুটি এলাচ নিন। এর ভেতরের দানাগুলো গুঁড়ো করে পানিতে ফুটিয়ে নিন। এই পানি ঠাণ্ডা করে পান করুন। অ্যাসিডিটি সমস্যায় ঝটপট সমাধান দেবে এই পানীয়।
৬) লবঙ্গ
লবঙ্গ হজমে সাহায্য করে এবং পাকস্থলীর অ্যাসিডিটি ও গ্যাস দূর করতে পারে এর বায়ু নিরোধক ক্ষমতার জন্য। ২/৩ টি লবঙ্গ মুখে নিয়ে চুষলে বা সমপরিমান এলাচ ও লবঙ্গ গুঁড়া খেলে অ্যাসিডিটির জ্বালা এবং মুখের দুর্গন্ধ দূর হয়।বুক জ্বলুনি ঠেকাতে লবঙ্গে প্রাকৃতিক গুণ আছে। বুক জ্বলুনি বোধ করলে একটি লবঙ্গ মুখে দিয়ে চিবোতে পারেন।
৭)জিরা
পাকস্থলীর এসিডকে নিরপেক্ষ করে পেটের ব্যাথা দূর করতে এবং হজমক্রিয়ায় জিরা চমৎকার কাজ করে। দেড়কাপ পানিতে এক চা চামচ করে জিরা, ধনে ও মৌরী গুঁড়া এবং সামান্য চিনি মিশিয়ে খালি পেটে খেতে পারেন অথবা এক গ্লাস পানিতে সামান্য জিরার গুঁড়া মিশিয়ে বা ফুটিয়ে ছেঁকে নিয়ে প্রতিবেলা খাবার পর খেতে পারেন।
৮) রসুন
অ্যাসিডিটির সমস্যা কমাতে রসুনের কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। এক্ষেত্রে এক কোয়া রসুন খেয়ে ফেললেই পাকস্থলির অ্যাসিডের কর্মক্ষমতা কমে যায়। ফলে গ্যাস-অম্বল সংক্রান্ত নানা লক্ষণ ধীরে ধীরে কমে যেতে শুরু করে।
৯) আদা
আদার রস পাকস্থলীর এসিডকে প্রশমিত করতে সাহায্য করে। অ্যাসিডিটির সময় এক টুকরো আদা মুখে নিয়ে চুষলে বা এক কাপ পানিতে কয়েক টুকরো আদা দিয়ে কিছুক্ষন ফুটিয়ে রেখে খেতে পারেন কিংবা শুধু এক চা চামচ করে আদার রস দিনে ২/৩ বার খেলে অ্যাসিডিটির থেকে মুক্তি পেটে পারেন।
১০) তালের গুড়
তালের গুড় খাবারকে হজমে সাহায্য করে এবং হজমক্রিয়াকে ক্ষারধর্মী করে অ্যাসিডিটি কমায়। প্রতিবেলা খাবার পর ছোট এক টুকরো গুড় মুখে নিয়ে চুষতে থাকবেন যতক্ষন না অ্যাসিডিটির জ্বালা কমে। তবে যাদের ডায়াবেটিস আছে তাদের জন্য এটা প্রযোজ্য নয়।
১১)মৌরী
পুদিনা পাতার মতো মৌরীরও রয়েছে বায়ু নিরোধক ক্ষমতা যার ফলে খাবার হজম করতে এবং পেটের গ্যাস দূর করতে এটা বেশ কার্যকরী। ভারী ও ঝাল খাবারের পর কিছু মৌরী মুখে দিয়ে চুষতে পারেন। আবার এক বা দুই চা চামচ মৌরী এক কাপ গরম পানিতে দিয়ে কিছুক্ষন রেখে ছেঁকে নিয়ে দিনে কয়েকবার খেতে পারেন।
১2) ঠাণ্ডা দুধ
পাকস্থলীর গ্যাস্ট্রিক এসিডকে নিয়ন্ত্রণ করে এসিডিটি থেকে মুক্তি দেয় দুধ। দুধে থাকা ক্যালসিয়াম পাকস্থলীতে এসিড তৈরিতে বাধা দেয়। শুধুমাত্র এক গ্লাস ঠাণ্ডা দুধ পান করেই এসিডিটির সমস্যা প্রতিরোধ বা উপশম করা সম্ভব। তবে খেয়াল রাখতে হবে যেন দুধটি পর্যাপ্ত পরিমাণ ঠাণ্ডা হয় এবং এতে কোনো চিনি মেশানো না থাকে।
১৩)কলা
কলা পটাসিয়ামের চমৎকার একটি উৎস। কলা খাওয়ার ফলে আপনার পাকস্থলির অ্যাসিড উৎপাদনের মাত্রা স্বাভাবিক হয়ে আসে। এই ফলে থাকা কিছু উপাদান অ্যাসিড থেকে পাকস্থলিকে রক্ষা করে। এর উচ্চ মাত্রার ফাইবার হজমে সহায়তা করে এবং অ্যাসিডিটি কমায়। তাই অ্যাসিডিটি থেকে ঝটপট মুক্তি পেতে একটি পাকা কলা খেয়ে ফেলুন। খুব বেশি সমস্যা হলে অতিরিক্ত পাকা কলা খান। বেশি পাকা কলায় বেশি মাত্রায় পটাসিয়াম থাকায় এটি খুব ভালো অম্লতানাশক হিসেবে কাজ করে।
১৪)সবজি:
সজনে ডাটা, শিম, মিষ্টি কুমড়া, বাঁধাকপি, গাজর, পেঁয়াজের মতো সবজিতে অ্যাসিডিটি ঠেকানোর উপাদান আছে। এ ধরনের সবজি খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন।
১৫). তুলসি পাতা
একেবারে ঠিক শুনেছেন। গ্যাস-অম্বলের সমস্যা কমাতে তুলসি পাতা দারুন কাজে আসে। এতে এমন কিছু উপাদান রয়েছে, যা খুব অল্প সময়ে অ্যাসিডিটিকে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে। তাই তো নিমেষে আরাম পেতে ৩-৫ টি তুলসি পাতা পানিতে ভিজিয়ে, সেই পানি ফুটিয়ে খেয়ে ফেলুন। দেখবেন চোখের পলকে অ্যাসিডিটি কমে যাবে।
১৬.) ডাবের পানি
গরমের সময় শরীরে পানির ঘাটতি মেটানোর পাশপাশি পাকস্থলির এসিডের ক্ষরণ স্বাভাবিক করতেও ডাবের পানি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। শুধু তাই নয়, শরীরে উপস্থিতি অতিরিক্ত এসিডকে বের করে দিতেও এই প্রাকৃতিক পানীয়টি সাহায্য করে। তাই তো অ্যাসিডিটির সমস্যা থেকে দূরে থাকতে প্রতিদিন ডাবের পানি খাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা।
১৭). অ্যালোভেরা
প্রচুর পরিমাণে খনিজ থাকার কারণে ত্বককে সুন্দর রাখার পাশপাশি হজম ক্ষমতার উন্নতিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে এই প্রাকৃতিক উপাদানটি। শুধু তাই নয়, অ্যালোভেরায় উপস্থিত এসিড, পাকস্থলিতে উৎপন্ন এসিডের কর্যকারিতা কমিয়ে দেয়। ফলে অ্যাসিডিটির সমস্যা একেবারে নিয়ন্ত্রণে চলে আসে।
১৮). ঘুমের আগে খাবার: ঘুমানোর কমপক্ষে দুই তিন ঘণ্টা আগে খাবার খাওয়া উচিত। ভারী খাবার খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিছানায় যাওয়া উচিত নয়।
সাবধানতা-
পরবর্তীতে যখনই আপনি এসিডিটির সমস্যায় পরবেন তখন এই পদ্ধতিগুলোর সাহায্য নিয়ে দেখতে পারেন কিন্তু যদি দেখেন ২/৩ দিন পরও আপনার সমস্যা থেকেই যাচ্ছে তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
Comments
Post a Comment