Skip to main content

ওজন কমানোর উপায়



ওজন কমানোর উপায় হিসেবে প্রথমেই আমাদের অতিরিক্ত মেদ বা চর্বি কমাতে হবে। অতিরিক্ত মেদ বা চর্বি আপনাকে শুধু বিব্রতই করবেনা, এটা আপনার জন্য ক্ষতিকরও বটে। ‘পূর্ণবয়স্ক’(Adult) একজন পুরুষের জন্য ৩৯.৫ ইঞ্চি ও পূর্ণ বয়স্ক একজন মহিলার জন্য ৩৫.৫ ইঞ্চির বেশি পেটের সাইজ থাকলে হার্টের রোগ ও ডায়াবেটিক হতে পারে। ওজন কমানোর সহজ উপায় সম্বন্ধে জানুন বিস্তারিতভাবে।

গরম পানিতে লেবু
গরম পানি ও লেবু দেহের বাড়তি মেদ ও চর্বি কমাতে অনেক সাহায্য করে এবং এটি ওজন কমানোর সহজ উপায় সমূহের একটি। এক মগ গরম পানিতে ১ ফালি লেবু ও ১ চিমটি লবণ মিশিয়ে নিন। চিকন হওয়ার উপায় হিসেবে চিনি ছাড়া লেবু পানি প্রতিদিন ২বার সকালে ঘুম থেকে উঠে আর রাতে ঘুমাতে যাবার আগে পান করবেন। বাড়তি মেদ কমিয়ে আপনাকে চিকন হতে সাহায্য করবে।

লাল চালের ভাত খেতে পারেন
চিকন হওয়ার জন্য সাদা ভাতের পরিবর্তে লাল চালের ভাত খেতে পারেন। লাল চালে আঁশ যুক্ত ও শর্করার পরিমাণ কম থাকে। এছাড়া ‘ওজন’(Weight) কমানোর জন্য ব্রাউন রুটি, সালাত খেতে পারেন। এতে দেহে ক্যালোরি কম ঢুকবে ফলে শরীরের জমা চর্বি খরচ হয়ে চিকন হতে সাহায্য করবে।

মিষ্টি বা চিনি দিয়ে তৈরি খাবার খাবেন না
চিকন হবার জন্য মিষ্টি বা চিনি দিয়ে তৈরি খাবার, পাকা কলা,আলু খাবেন না। কেননা এ জাতীয় খাবারগুলোর শর্করা আপনার শরীরে অতিরিক্ত ক্যালোরি যোগান দিয়ে দেহের বিভিন্ন অংশে চর্বি জমিয়ে ফেলে। তাই ওজন কমানোর জন্য এগুলো খাওয়ার পরিবর্তে প্রতিদিন ১টি টক জাতীয় ফল খাবেন।

প্রতিদিন রসুন
চিকন হওয়ার জন্য প্রতিদিন সকালে খালি পেটে ১কোয়া রসুন চিবিয়ে খাবেন। এরপর গরম পানিতে চিনি ছাড়া লেবু রস মিশিয়ে পান করবেন লেবুর রস। লেবু পানি আপনার পেটের চর্বি কমিয়ে চিকন হওয়ার সহজ উপায় হিসেবে দ্বিগুণ দ্রুতগতিতে কাজ করবে। সাথে কাঁচা রসুন খাওয়ার উপকার পাবেন।

প্রচুর ফল ও সবজি রাখুন প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায়
প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় চিকন হওয়ার জন্য প্রচুর ফল ও সবজি রাখুন। সকাল ও সন্ধ্যায় নিয়ম করে ফল ও সবজি খাবার চেষ্টা করবেন। এতে আপনার শরীর থাকবে সজিব সাথে পাবে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট, মিনারেল ও ‘ভিটামিন’(Vitamins)। ওজন কমানোর সুবিধাও পাবেন।

রান্নায় উপকারী মসলা ব্যবহার
আপনার রান্নায় ব্যবহার করবেন জিরা ধনিয়া, হলুদ, রসুন, মরিচ, আদা, পেয়াজ ও গোলমরিচ। এসেন্স এর মধ্যে ভ্যানিলা এসেন্স, স্ট্রবেরী এসেন্স খেতে পারবেন। কারণ এসব মসলার রয়েছে অনেক ভেষজ গুনাগুন ও স্বল্প ক্যালরিযুক্ত যা আপনাকে রক্তে শর্করার পরিমাণ কমিয়ে মোটা স্বাস্থ্যের ওজন কমিয়ে চিকন হতে সাহায্য করবে।

আমিষের অভাব পূরণের জন্যে ডাল
খাদ্য তালিকায় যতটা সম্ভব অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত মাংস সাথে অন্যান্য আমিষ জাতীয় খাবার পরিহার করবেন। তবে আমিষের অভাব পূরণের জন্যে ডাল খেতে পারেন। ২-৩ ধরনের ডাল এক সঙ্গে রান্না করে খেলে মাছ, মাংস, ডিমের অভাব পূরণ করা যায়। এর ফলে আপনার শরীরের অযাচিত ওজন কমিয়ে চিকন হতে পারবেন।

কমপক্ষে ৩ লিটার পানি পান করুন
যে কোনো সুস্থ মানুষেরই দিনে কমপক্ষে ৩ লিটার পানি পান করা প্রয়োজন। প্রতিদিন প্রচুর পানি পান করার ফলে দেহের মেটাবলিজম বাড়ায় ও রক্তের ক্ষতিকর উপাদান প্রস্রাবের সঙ্গে বের হয়ে যায়। চিকন হওয়ার জন্য পেছনে উচ্চ মেটাবলিজম দায়ী তেমনি মোটা হওয়ার জন্য ধীর গতির মেটাবলিজম দায়ী। যারা ওজন কমাতে আগ্রহী তাদের জন্য প্রয়োজন বেশি বেশি পরিমাণ পানি পান করা।

নিয়মিত হাঁটতে হবে
দিনে মাত্র ১৫ মিনিট জোরে জোরে হাঁটলে ১৬০ গ্রাম ক্যালোরি খরচ হয়। তাই খুব দ্রুত গতিতে হাঁটা প্রয়োজন। আরাম করে হাঁটলে/জগিং করলে ক্যালোরি খুব কম খরচ হয়।

খাদ্য তালিকা সাজান নতুনভাবে
ওজন কমানোর জন্য নুতন খাদ্য তালিকা তৈরি করুন। মিষ্টি, গুর, মধুযুক্ত খাবার, মিষ্টি জাতীয় খাবার বাদ দিতে হবে। শর্করাবহুল খাবার গুলো (চাল, আটা দিয়ে তৈরি খাবার, মিষ্টি ফল ইত্যাদি) হিসেব করে খেতে হবে। ওজন কমাবার উপায় হিসেব আঁশযুক্ত খাবার গুলো (ডাল, শাক, সবজি, টক ফল ইত্যাদি)বেশি করে খেতে হবে। স্যাচুরেটেড ফ্যাট (ঘি, মাখন, চর্বি, ডালডা, মাংস ইত্যাদি) কম খাওয়া, আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট (উদ্ভিদ তৈল-সয়াবিন তৈল, সরিষার তৈল) এবং সব ধরনের মাছ খেতে হবে। তবে ওজন কমাবার উপায় হিসেব মিষ্টিজাতীয় পানীয় একেবারে খাবেন না, এর পরিবর্তে চা অথবা কফি খাবেন।

নির্দিষ্ট সময়ে ও নির্দিষ্ট পরিমানে খাবার খান
ওজন কমানোর জন্য নির্দিষ্ট সময়ে খাবার খেতে হবে। কোন বেলায় খাবার খাওয়া বাদ দেওয়া চলবে না। আজ কম খাব,কাল বেশি খাবার খাব এমন করা ঠিক না। ওজন কমানোর জন্য আপনার শরীরে কত গ্রাম ক্যালোরি প্রয়োজন তা ঠিক করে নিবেন এবং ক্যালোরি বহুল খাবার নির্দিষ্ট পরিমানেই খেতে হবে।

সোডা পান করবেন না
প্রতিদিন একটি বা দুইটা সোডা পান দেহের ‘অতিরিক্ত’(Extra) ওজন হওয়ার সম্ভাবনাকে ৩৩ শতাংশ পর্যন্ত বাড়িয়ে দেয়। এমনকি ডায়েট সোডা পান করাও মোটেও উচিত না। চিকন হওয়ার জন্য এসব ত্যাগ করা উচিত।

ফলের শরবত পান করবেন না
সকল ফলের শরবতেই প্রচুর পরিমানে চিনি থাকে এবং সেগুলো কিছুটা চটচটে টাইপের হয় যা কিনা তৈরী করা হয় অনেক বেশী পরিমান ফ্রুক্টোজ কর্ন সিরাপ দিয়ে। যা শরীরের ওজন কমানোতে বাধা দিয়ে চিকন থাকার উপাদানগুলোকে নষ্ট করে দেয়।



Comments

Popular posts from this blog

আলসার রোগীর খাদ্য তালিকা

আলসার বা পেটের ভিতরে হওয়া ঘা রোগীর জীবনকে দুর্বিষহ করে তোলে। পেটের দেওয়ালে হওয়া ঘায়ের সঙ্গে খাবারের মধ্যে থাকা মশলা , তরল ইত্যাদির সংস্পর্শ হলে বা অ্যাসিডিটি হলে পেটে প্রচণ্ড ব্যথা হয় , গ্যাসট্রাইটিসের সমস্যা হয় , পেট জ্বালা করতে থাকে যা সহ্য করা একেক সময় অসম্ভব হয়ে ওঠে। আলসারের মধ্যে সবচেয়ে চেনা নাম হল ' গ্যাসট্রিক আলসার ' । আল্ট্রাসনোগ্রাফি করে আলসার ধরা পড়ার পর চিকিৎসার মাধ্যমে সারানো যায়। বস্তুত , আলসার সারানোর নানা উপায় রয়েছে। আলসার সেরে যাওয়ার পর ঠিকমতো ডায়েট চার্ট মেনে চলাও সবার অবশ্য কর্তব্য। একইসঙ্গে ধূমপান না করা , মদ্যপানে বিরত থাকার কথাও চিকৎসকেরা বারবার করে বলে দেন। আসুন দেখে নেওয়া যাক , কোন কোন খাবার ডায়েট চার্টে থাকলে আলসার সারতে পারে সহজেই। মধু মধু এমন একটি অ্যান্টিসেপটিক যা যে কোনও জ্বালা-পোড়া বা ঘা সারাতে লড়াই করে। মধু খেলে আলসার আর বাড়ে না। বরং ধীরে ধীরে কমবে। টক দই কম ফ্যাটের ডেয়ারি প্রোডাক্ট, বিশেষ করে দই আলসার সারাতে অসাধারণ কাজ করে। চর্বিহীন মাংস ও পোলট্রি  প্রোডাক্ট চর্বিহীন মাংস ও পোল...

আমাশয় এবং আইবিএস কি ? #004

শহরের স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মুরাদ হোসেন, বয়স পঞ্চাশ, উদ্বিগ্ন মনে একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের চেম্বারে বসে আছেন। কয়েকদিন যাবৎ তার পেটটা ভাল যাচ্ছে না। এর আগেও তার পাতলা পায়খানার সমস্যা হয়েছে। কিন্তু এবার তিনি লক্ষ্য করেছেন- পায়খানার সাথে লাল লাল রক্ত যাচ্ছে। তাই তিনি চিন্তিত মনে তার সমস্যা নির্ণয়ের চেষ্টায় চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়েছেন। পারভিন আক্তার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী। বয়স চব্বিসের কাছাকাছি হবে। কয়েক মাস ধরে তার পেটে সমস্যা হচ্ছে। দিনে দু থেকে তিনবার পায়খানা হয়, প্রত্যেকবার পায়খানার আগে পেটটা মোচড় দিয়ে ব্যথা হয়, পায়খানা হয়ে গেলে ব্যথা কমে যায়। পেটে শব্দ হয় এবং পায়খানা কিছুদিন পাতলা হয়, আবার কিছুদিন ভাল থাকে। পায়খানার সাথে আম যায়। এমতাবস্থায় দৈনন্দিন কাজে সমস্যা হওয়ায় একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের নিকট পরামর্শের জন্য এসেছেন। দীর্ঘমেয়াদী লিভার প্রদাহের সমস্যায় ভুগছেন চল্লিশ বছর বয়সী রাকিব মোল্লা। নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শে ঔষধ সেবন করে যাচ্ছেন। কয়েক মাস হল তার পায়খানা পাতলা হতে শুরু করেছে। কিছুদিন ভাল থাকে, কিছুদিন পাতলা হয়, কিছুদিন কষা হয়। পায়খানার সাথে আম যায়। পেটে খু...

ওজন কমানোর ছয় টি ভুল ধারণা

বাড়তি ওজন কমে গেলে কার না ভালো লাগে! তাই ওজন কমাতে অনেকে হয়তো উঠেপড়ে লাগেন। আর ভুলভাল রীতি মেনে চলতে থাকেন।এতে অনেকের বাড়তি মেদ   কমলেও শরীরের ওপর বাজে প্রভাব পড়ে। আবার চেষ্টার পরও কাঙ্ক্ষিত ফলাফল পায় না অনেকে। ওজণ   কমানোর কিছু ভুল ধারণার কথা   জেনে নিন। 1: কার্বোহাইড্রেট শত্রু অনেকেই ওজণ কমানোর সময় কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার একেবারেই বাদ দিয়ে দেন বা ভাবেন Weight কমাতে গেলে কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার বাদ দিতেই হবে। সত্য হলো , শরীরের বাড়তি মেদ কমাতে গেলে বা স্বাস্থ্যকে ভালো রাখতে গেলে কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার বাদ দিলে চলবে না। স্বাস্থ্যকর কার্বোহাইড্রেটের উৎস যেমন : ফল , সবজি , বাদাম , গম জাতীয় খাবার এগুলো শরীরের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।   ওজন   কমাতে প্রোটিনের সঙ্গে কার্বোহাইড্রেটের ভারসাম্য রাখতে হবে। তবে পরিশোধিত কার্বোহাইড্রেট খাওয়া কমিয়ে দেওয়ার বিষয়ে একমত বিশেষজ্ঞরা। পরিশোধিত কার্বোহাইড্রেট যেমন : সাদা ভাত , সাদা পাস্তা , প্রক্রিয়াজাত স্ন্যাক , মিষ্টি ইত্যাদি। এগুলো কম খাওয়াই ভালো। 2: দ্রুত ফলাফল পেতে জিমে গিয়ে কঠোর ব্যায়াম করা প্রতিদিন সমপর...